চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম আইন কলেজ সাবেক ছাত্রদল নেতাকে পারিবারিক বিরোধের জেরে যুবলীগ সাজিয়ে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম মহানগর সাবেক ছাত্রদল নেতা, চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আইন কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সাবেক ভিপি প্রার্থী মোঃ সালাউদ্দীনকে ছাত্র-জনতার উপর হামলার অভিযোগের ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাবেক ছাত্রদল নেতা ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী সালাউদ্দীনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় বিএনপির রাজনীতির মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক ছাত্রদল নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের কোন নেতা কর্মী জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান।

জানা গেছে, চট্রগ্রাম মহানগর সাবেক ছাত্রদল নেতা,  চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও আইন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি প্রার্থী মোঃ সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী মানিক বাঁশখালী গ্রামের বাড়িতে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা ও তার আপন ভাই ছাত্রলীগ নেতা এই দুই ভাইয়ের সাথে জায়গা জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ থাকায় তাকে দুই ভাই মিলে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। নগরীর পাঁচলাইশ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলার বাদী ভোলা জেলার উদয়পুর রাস্তার মাথা গ্রামের বোরহান উদ্দীন উপজেলার শফিকুর রহমানের পুত্র মিনহাজুর রহমান বাদী হয়ে ২৫ সেপ্টম্বর এ মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগ করা হয় গত ১৬ জুলাই বিকাল চারটায় চট্টগ্রাম শপিং এর বিপরীতে এস এ পরিবহনের পাশে ৩৩ জন এজাহার নামীয় এবং ১৫০/২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। মামলায় ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী মানিককে ২৩নং আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী মিনহাজুর রহমানকে বিএনপি যুবদল, ছাত্রদলের কোন পর্যায়ের নেতারা চিনতে পারছে না। বাদীর দেয়া ঠিকানা নগরীর ২নং গেইট আলফালাহ গলির রাব্বানি হাউসেও বাদীকে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে আইন কলেজ ছাত্রদলের সাবেক নেতা ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী মোহাম্মদ সালাউদ্দীন কাদেরকে আসামি করে চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রাম এ রাউজান উপজেলার পলোয়ান পাড়া এলাকার  সামশুল হকের পুত্র মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে গত ১৭ সেপ্টম্বর মামলা করেন। মামলায় ১৬নং আসামি করা হয় সাবেক ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দীন কাদের মানিককে। উক্ত বাদীকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদল নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে সিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে গত  ৩ অক্টোবর।

ছাত্রদল নেতা মোঃ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী মানিক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় মাঠে ময়দানে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে একাধিকবার গ্রেফতার এবং একাধিক মামলার আসামি হয়েছে । এ বিষয়ে পাঁচলাইশ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ঘটনায় জড়িত না এরকম কোন ব্যাক্তির নাম মামলায় আসলেও তদন্তে তাদের নাম বাদ যাবে। পুলিশ বিশেষ করে নিরপরাধ কোন ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত কাজ করছে। এ বিষয়ে চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন বলেন, কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আইন কলেজ সাবেক ছাত্রদল নেতা মোঃ সালাদ্দীন কাদের চৌধুরী মানিক বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং দলের দুঃসময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করায় আওয়ামী স্বৈরাচারীর বিভিন্ন মামলা-হামলার স্বীকার হই। দুঃখজনক বিষয় হলো আমার সাথে গ্রামে পারিবারিক জায়গা জমি নিয়ে মহানগর ছাত্রদলের এক নেতার সাথে বিরোধ রয়েছে। এ বিষয়ে বাঁশখালী থানায় সাধারন ডায়েরি নং ৮৫৮ দায়ের করা আছে যাহা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। বিরোধের জের ধরে টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া বাদীকে দিয়ে আমাকে হেয় করার জন্য আসামি করা হয়েছে। অথচ ঘটনার সাথে আমি বিন্দুমাত্র জড়িত না এবং জানিও না এমনকি বাদীকেও আমি জীবনে দেখিনি। হাস্যকর বিষয় হলো বিভিন্ন রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে ঐ ছাত্রদল নেতার আপন ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং তার বাবা জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত। প্রকাশ আছে যে তার মা ও আপন আর এক ভাই ভিন্ন রাজনীতির সাথে জড়িত। অথচ আমি ছাত্রদল রাজনীতি করার কারনে উল্লেখিত ঐ ছাত্রদল ও ছাত্রলীগসহ তাদের পরিবার আত্মীয়-স্বজন সংঘবদ্ধ হয়ে Rab-7 কে তথ্য দিয়ে আমাকে চান্দগাঁও থানার মামলা নং ২১(১১)২৩ এ বিগত নির্বাচনের পূর্বে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৮/১২/২৩ ইং তারিখে গ্রেফতার করে। তারা দুই ভাই (ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ)সহ তাদের পরিবারের সদস্যরা আমাকে বারবার হয়রানী করে আমার জায়গা জমি লুটেপুটে খাওয়ার জন্য মামলায় ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন,  ব্যক্তিগত বিরোধের কারনে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে যদি বিএনপির কোন নেতা কর্মীর ইন্দনে দলীয় কোন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে প্রমান পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিএনপি নেতা কর্মীরা বিগত প্রায় দেড় যুগ ধরে মামলা হামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ সময়ে এসেও যদি মিথ্যা মামলার শিকার হয় সেটা মেনে নেয়ার মত না।