‘ঘৃণার প্রতীক’ হাসিনার ছবি মোছায় ঢাবিতে ক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ছবি ছাত্রদের ‘ঘৃণার প্রতীক’ হয়ে উঠেছিল, সেই ছবি মুছে ফেলার ঘটনায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদের অনুমতি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছে জেনে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
গণ অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার ওই ছবি লাল রঙের ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ২টার দিকে কয়েকজন লোক মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবি মুছতে গেলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে তারা জানতে পারেন, প্রক্টরের অনুমতিতেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এসময় একটি পিলারে শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ছবি, অন্যটিতে শেখ হাসিনার ছবির মুখের অংশ মুছে ফেলা হয়।
পরে শিক্ষার্থীরা বাধা দিয়ে মোছা বন্ধ করেন এবং পুনরায় সেখানে শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। এরপর তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
ব্যঙ্গচিত্র আঁকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাইয়ান ফেরদৌস ফেইসবুকে লিখেছেন, “খুনি হাসিনার ছবি আবার অঙ্কন করতেছি আমরা। তারপর জুতার মালা পরানো হবে।”
ছবি মুছে ফেলার কাজটি ‘নিষ্পাপ সিদ্ধান্ত’ মন্তব্য করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, “গোয়েন্দা সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ছবি তোলে। এই ছবিগুলোর সাথে শেখ হাসিনার এবং শেখ মুজিবের ছবিও যায়। তাই ওরা বলেছে, এখনো টিএসসিতে কীভাবে তাদের ছবি থাকে। তখন আমি ভারপ্রাপ্ত এস্টেট ম্যানেজার ফাতেমা বিনতে মুস্তাফাকে বললাম মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বলার জন্য। পরে মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে লোক পাঠিয়ে মুছে ফেলা হয়।”
প্রক্টরের ভাষ্য, “এ ঘটনার পেছনে কারো কোনো ষড়যন্ত্র নেই।”
তিনি বলেন, “কালকে আমি ঘটনাস্থলে গেছি। ওখানে চারুকলার দুজন শিক্ষার্থী এটাকে পুনরায় আঁকতে চাইল। আমি বললাম তোমরা যেভাবে আঁকতে চাও আঁকো। এছাড়া তাদেরকে বলেছি, আমি দুঃখপ্রকাশ করে একটি বিবৃতি দেব। আর এই স্তম্ভকে স্থায়ীভাবে ‘ঘৃণা স্তম্ভ’ ঘোষণা করব। ওরা সবাই এটা মেনে নিয়েছে।”
শিক্ষার্থীরা যেমন চাইবে তেমন করেই স্তম্ভটি পুনরায় তৈরি করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন প্রক্টর।
ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে ফেইসবুকে লিখেছেন, “প্রক্টররে পদত্যাগ করতে হবে। এনএসআইয়ের প্রেসক্রিপশন নাকি র এর প্রেসক্রিপশন এসব আমি চিনি না। কোন সাহসে হাসিনার গ্রাফিতি মুছে?!”