
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে অনানুষ্ঠানিক জয় পেয়েছেন জোহরান মামদানি। এর ফলে প্রথম মুসলিম মেয়র পেতে যাচ্ছে নিউইয়র্ক। ৩৩ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক সমাজতন্ত্রী জোহরান মামদানির এ জয়কে ঐতিহাসিক বলছেন নির্বাচক পর্যবেক্ষকরা। সেইসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির জন্যও বড় দুঃসংবাদ এটি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার পথে প্রথম বাধা অতিক্রম করেছেন জোহরান। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে তিনি নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তবে চূড়ান্ত ফল জানতে কয়েক দিন লাগতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক ফল তার পক্ষে যাওয়ায় দৈব কিছু না ঘটলে তিনিই মেয়র হতে চলেছেন।
ভোট গ্রহণের এক সপ্তাহ আগেও সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুওমো ব্যাপক ফেভারিট ছিলেন। কিন্তু প্রগতিশীল এই তরুণ প্রার্থীর পক্ষে উল্লেখযোগ্য ভোট পড়ার পর তিনি প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ান।
মঙ্গলবার রাতে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কুওমো বলেন, তিনি মামদানিকে ফোন করে ‘অভিনন্দন’ জানিয়েছেন।
কুওমো বলেন, ‘তিনি একটি দুর্দান্ত প্রচারণা গড়ে তুলেছেন এবং তরুণদের স্পর্শ করেছেন। তাদের উৎসাহিত করেছেন, প্রভাবিত করেছেন এবং ভোট দিতে বেরিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করেছেন। আমি তার প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিকভাবে প্রশংসা করি। মামদানি সত্যিই স্মার্ট, ভালো এবং প্রভাবশালী প্রচারণা চালিয়েছেন। আজ রাত তার রাত। তিনি এটি প্রাপ্য। তিনি জিতেছেন।’
এদিকে সমর্থকদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় মামদানি বলেন, ‘আজ রাতে, আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি। আমি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে আপনাদের ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হবো।’
সর্বশেষ নির্বাচনী ফল অনুযায়ী, প্রাইমারির প্রথম রাউন্ডে ৯৩ শতাংশ ভোট গণনার পর মামদানি ৪৩.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। কুওমো পেয়েছেন ৩৬.৪ শতাংশ।
নিউইয়র্ক সিটি একটি র্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। যেহেতু কোনো প্রার্থীই সম্ভবত ৫০ শতাংশ ভোটে পৌঁছাবেন না, তাই নির্বাচন বোর্ড এখন ভোটারদের দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীদের গণনা করবে। এই গণনায় কুওমোর চেয়ে মামদানি বেশি ভোট পাবেন বলে পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে।
মামদানির এই উত্থান দেশজুড়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী অন্য প্রগতিশীলদের আশা জাগাবে। কারণ, কুওমোর পেছনে বিল ক্লিনটনের মতো প্রভাবশালীরা অর্থ ঢালেন। কিন্তু মামদানির জনপ্রিয়তা বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তৃণমূল সমর্থনের জোয়ার সব পূর্বাভাস ম্লান করে দেয়।
মামদানি বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রতিযোগিতা ছিল। আমি আশা করি, আমি নিজেকে আরেকবার প্রমাণ করতে পারব। আমি আপনাদের মেয়র হবো। আমি প্রতিজন নিউইয়র্কবাসীর মেয়র হবো। আপনি আমাকে ভোট দিন বা গভর্নর কুওমোকে ভোট দিন বা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় হতাশ হয়ে কাউকে ভোট না দিন, আমি সবাইকে নিয়ে পথ চলব।