
সিরিয়া ও গাজায় খ্রিস্টান ধর্মীয় উপাসনালয়ে ইসরায়েলের হামলায় গভীর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই ঘটনাকে “হতবাক করার মতো” বলে আখ্যা দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সরাসরি ফোনালাপও করেন তিনি।
তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলুর বরাতে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানান, “সিরিয়ায় বোমা হামলা এবং গাজার একটি ক্যাথলিক চার্চে হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্পূর্ণভাবে হতবাক হন। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।”
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুলাই দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশে বেদুইন আরব ও দ্রুজ গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পর ১৬ জুলাই ইসরায়েল বিমান হামলা চালায় সিরিয়ার প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস, জেনারেল স্টাফ হেডকোয়ার্টার এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর। এই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলের নেতানিয়াহু প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতিকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরেও উদ্বেগ ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এরপর ১৮ জুলাই ইসরায়েল গাজার একটি ঐতিহাসিক ক্যাথলিক গির্জা “চার্চ অব দ্য হোলি ফ্যামিলি”-তে বিমান হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত হন এবং আরও অন্তত দশজন আহত হন। আহতদের মধ্যে ছিলেন ওই চার্চের প্যারিশ পুরোহিতও।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউস মুখপাত্র বলেন, “এই যুদ্ধ অনেক দীর্ঘ হয়ে গেছে এবং তা ভয়াবহ নিষ্ঠুর রূপ নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট চান যেন দ্রুত রক্তপাত বন্ধ হয়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং গাজা থেকে আটক সকল জিম্মিদের মুক্ত করা হয়।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় সম্পূর্ণ অবরোধ জারি করেছে। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও জরুরি সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই অবরোধকে মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস হিসেবে উল্লেখ করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল আরও কঠোর অবস্থানে গেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৯ হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।