১৮ কোটি টাকায় ব্যাটমোবাইল কিনেছেন নেইমার, তবে রাস্তায় চালানো নিষিদ্ধ

 

ফুটবল মাঠে যেমন আলোচনায়, মাঠের বাইরেও ঠিক ততটাই চমকে দেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার জুনিয়র। এবার নিজ গ্যারাজে যুক্ত করলেন ব্যতিক্রমী এক বাহন—প্রখ্যাত “ডার্ক নাইট” সিরিজের ব্যাটমোবাইল!

স্প্যানিশ ক্রীড়ামাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, হলিউড স্টুডিও ওয়ার্নার ব্রাদার্স নির্মিত এই ব্যাটমোবাইল গাড়িটির বিশেষ সংস্করণ বিশ্বে মাত্র ১০টি রয়েছে। ব্যাটম্যান চরিত্রের ৮৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে নির্মিত হয়েছে গাড়িটি। ডিজাইন নেওয়া হয়েছে ক্রিস্টোফার নোলানের “ডার্ক নাইট ট্রিলজি” থেকে, যেখানে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ান বেল।

মূল দাম প্রায় ৩০ লাখ ডলার হলেও, নেইমার এটি কিনেছেন ১৫ লাখ ডলারে—বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা।

গাড়িটির দৈর্ঘ্য ৪.৬৫ মিটার, প্রস্থ ২.৮ মিটার। শক্তিশালী স্টিল ফ্রেমে তৈরি এই বাহনের শরীরে ব্যবহার করা হয়েছে কার্বন ফাইবার ও কেভলার। এতে রয়েছে ৬.২ লিটার ভি৮ ইঞ্জিন, যার ক্ষমতা ৫২৫ হর্সপাওয়ার। তবে এখানেই শেষ নয়।

সিনেমার মতো বেশ কিছু অভিনব ফিচারও রয়েছে এতে—ধোঁয়ার বোমা নিক্ষেপের ব্যবস্থা, জেট ইঞ্জিনের রেপ্লিকা, অকার্যকর মেশিনগান আকৃতির সাজানো অস্ত্র, স্বয়ংক্রিয় স্পয়লার, ব্যাটম্যান-রবিন ককপিট স্টাইলের বিশেষ সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্টসহ আরও নানা চমক।

তবে হতাশার দিক হলো—এত বিশাল দামের ও অভিনব প্রযুক্তির এই গাড়িটি নেইমার ব্রাজিল বা ইউরোপের কোনো রাস্তায় চালাতে পারবেন না। সেখানকার ট্রাফিক আইন অনুযায়ী, এমন যান চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই এটি শুধু শোভা বাড়াবে তার গ্যারাজের।

নেইমারের ব্যক্তিগত গ্যারাজে এর আগে থেকেই রয়েছে ল্যাম্বরগিনি হুরাকান, ফেরারি পুরোসাঙে, বেন্টলি কন্টিনেন্টাল, অ্যাস্টন মার্টিন ডিবিএক্স ও অডি আর৮ স্পাইডারের মতো একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি।

ব্যাটম্যানের প্রতি নেইমারের ভালোবাসাও নতুন নয়। পিঠে রয়েছে ব্যাটম্যান লোগোর ট্যাটু। ২০২২ সালে ‘দ্য ব্যাটম্যান’ সিনেমার প্রিমিয়ারে অংশ নিয়ে ব্যাটমোবাইলেই আসেন তিনি।

ধনসম্পদের দিক থেকেও নেইমার কোনো অংশে কম যান না। Celebrity Net Worth-এর তথ্য অনুযায়ী, তার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার। সৌদি ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে বছরে প্রায় ১৬ কোটি ৩৭ লাখ ডলারের চুক্তি করেছিলেন তিনি, যার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নেন—তবু বিদায়কালীন সময়েই আয় করেন আরও ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

এছাড়াও পিউমা, রেড বুল, প্যানাসনিক ও বিটসের মতো বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে প্রতি বছর ৩ থেকে ৪ কোটি ডলার উপার্জন করেন তিনি।

নেইমারের বিলাসবহুল সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে দুবাইয়ের ৫ কোটি ডলারের পেন্টহাউস, মায়ামিতে বিশাল সম্পত্তি, এবং ব্রাজিলে ব্যক্তিগত একটি দ্বীপ।

ব্যাটম্যান-প্রীতিতে বিমোহিত এই সুপারস্টার যেন বাস্তব জীবনের ‘সুপারহিরো’—অন্তত জীবনযাত্রার মানদণ্ডে।